রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:৩৮

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
রোহিঙ্গাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে

রোহিঙ্গাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে

dynamic-sidebar

মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে এখন ভয়াবহ অবস্থা। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এ রাজ্যে গত শুক্রবার থেকে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে শতাধিক নিহত হয়েছে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও ১২ সদস্য নিহত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। বলা হচ্ছে গত বছরের অক্টোবরের সহিংসতার পর এ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে পালাচ্ছে হাজার হাজার লোক।
মিয়ানমার সরকার তরফে বলা হয়েছে ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা লাঠি, ছুরি ও ঘরে তৈরি বোমা নিয়ে ওই এলাকায় পুলিশের বেশ কয়েকটি চৌকি ও সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালায়। তারপর থেকে দুপক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নামে একটি গ্রুপ এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
গত বছর রাখাইনে একটি পুলিশ চেকপোস্টে হামলার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল সেখানে। তখন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। সরকারী বাহিনীর অভিযানের কারণে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এবারও সেরকম অবস্থা দেখা যাচ্ছে। রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কারণে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। অনেকে গুলিবিদ্ধ ও আহত অবস্থায় বাংলাদেশে ঢুকছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক।
তবে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপের এ হামলার পেছনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীরও দায় রয়েছে। এ মাসের মাঝামাঝি নিরাপত্তা বাহিনী দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় দমন অভিযান শুরুর পর থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসার সময় এ ধরনের দমন অভিযান কাম্য ছিল না। এতে মিয়ানমার সরকারের চিরায়ত রোহিঙ্গা নির্মূলেরই মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে হামলা ও নির্যাতনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। যারা থেকে গেছে তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার যা করছে তা সভ্যতা-ভব্যতার সব সীমা লঙ্ঘন করেছে।
আশঙ্কার বিষয় হলো রাখাইনের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের স্বার্থে জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার ২৪ ঘন্টার কম সময়ের মধ্যে এ সংঘাত শুরু হয়ে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যে ৮৮টি সুপারিশ করা হয়েছে, তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের চলাফেরার ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিন্তু এই হামলার কারণে জাতিসংঘের করা সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
মিয়ানমারে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে সেটিও সমর্থনযোগ্য নয়। এ ধরনের হামলা অযৌক্তিক ও অন্যায়। রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করে কোনো গোষ্ঠী টিকে থাকতে পারে না। কিন্তু এসবের দায় রোহিঙ্গাদের ওপর চাপানো মোটেও সমীচীন নয়। রাখাইনে হামলাকারী সশস্ত্র গ্রুপের পেছনে মুসলমান বিদ্বেষী কোনো অপশক্তি রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
আর সভ্য পৃথিবীতে কোনো জাতিগোষ্ঠীর অধিকার অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারেরই নাগরিক। তাদের দায়-দায়িত্ব মিয়ানমারকেই নিতে হবে। মিয়ানমারে নতুন করে যে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হত্যা, জুলুম-নির্যাতন, জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে জাতিসংঘসহ বিশ্বমানবতাকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে হবে। রোহিঙ্গাদের জাতিগত অধিকার মেনে নিতেও চাপ প্রয়োগ করতে হবে মিয়ানমারকে।

 

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net